যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
লক্ষ্যভুক্ত মহিলাদের জন্য ৬টি বিষয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা । যেমনঃ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা, আইনী সহায়তা এবং জেন্ডার।
i. স্বাস্থ্য সংক্রান্তঃ তথ্যকেন্দ্রসমূহ হতে বিনামূল্যে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ইন্টারনেটভিত্তিক নিম্নলিখিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাসমূহ প্রদান করা হয় :
প্রত্যেক সেবাগ্রহীতার জন্য একটি হিসাব নম্বর তৈরি করে তাকে প্রদত্ত সেবার তথ্য সেভ করে রাখা হয় এবং তার সেবা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন মোবাইলে মেসেজ আকারে এবং ই-মেইলে তাকে প্রদান করা হয়। উপরন্তু সেভ করে রাখা এ তথ্য কোন সেবাগ্রহীতা পরবর্তীতে দেখতে চাইলে বা প্রিন্ট নিতে চাইলে সেটি প্রদান করা হয়।
উপরন্তু তথ্যআপা হেল্থ এ্যাপসের মাধ্যমে কোভিড ১৯ স্ক্রিনিং করা হয় এবং কোভিড ঝুকি বিষয়ে পূর্ভাবাস প্রদান করা হয়। এছাড়া, কোভিড ভেক্সিনেশনের নিবন্ধন করা হয়।
ii. শিক্ষা সংক্রান্তঃ ইন্টারনেট ব্যবহার করে শিক্ষা বিষয়ক যে সমস্ত সেবা প্রদান করা হয়
এছাড়া ক্যারিয়ার বিষয়ক পরামর্শসহ বিভিন্ন রকম সেবা প্রদান করা হয়।
iii. কৃষি বিষয়ক যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
তথ্যআপারা গ্রামীণ নারীদের প্রয়োজনীয় কৃষি সংক্রান্ত পরামর্শ প্রাপ্তিতে সহায়তা করেন। উঠান বৈঠকে কৃষি কর্মকর্তাদেরকে রিসোর্স পার্সন হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে গ্রামীণ নারীদেরকে কৃষি বিষয়ক পরামর্শ প্রদান করা হয় এবং কোন নারী তার কৃষির সমস্যা সংক্রান্ত বিষয় কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করে তার সমাধানে পরামর্শ পাচ্ছেন। তাছাড়া তথ্যআপারা ডোর টু ডোর সেবার আওতায় গ্রামীণ নারীদের কৃষি সংক্রান্ত সমস্যা জেনে তাদের সমস্যা আক্রান্ত কৃষির ছবি/ভিডিও ধারণ করে উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদেরকে তা প্রেরণ করে পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং নারীদেরকে প্রদান করেন। এছাড়া অনেকক্ষেত্রে তথ্যআপারা সংশ্লিষ্ট কৃষি ভূমিতে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে গ্রামীণ নারীদের অনলাইনে সংযুক্ত করে তাৎক্ষণিক পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ করে দেন।
iv. ব্যবসা সংক্রান্ত যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
তথ্যআপা প্রকল্প (২য় পর্যায়) যে ০৫ টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ঘোষণা করেছে এর মধ্যে তৃতীয়টি হচ্ছে তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে ই-কমার্স সহায়তা প্রদান। এ লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত, কমসুবিধাপ্রাপ্ত দরিদ্র ও অসহায় নারীদের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা তৈরি এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য ই-কমার্স পদ্ধতিতে বিক্রয়ের লক্ষ্যে প্রকল্পটির আওতায় লালসবুজ ডট কম (www.laalsobuj.com) নামের একটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস চালু করা হয়েছে। সারাদেশব্যাপী তথ্যআপা প্রকল্পের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে ই-কমার্স কে প্রত্যন্ত অঞ্চলে তৃণমূল নারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে সারাদেশের প্রতিষ্ঠিত তথ্যকেন্দ্রে কর্মরত তথ্যআপাদেরকে ই-কমার্স বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এসব প্রশিক্ষিত তথ্যআপারা উপজেলায় উদ্যোক্তা নির্বাচন, তাদের মোটিভেশন প্রদান, মার্কেটপ্লেসে তাদের নিবন্ধনকরণ ও তাদের পণ্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে উপস্থাপন কাজে সহায়তা করছে। তথ্যআপারা ই-কমার্সে গ্রামীণ নারীদের সবরকম সহায়তা প্রদান করছেন। পাশাপাশি কোন নারী ব্যবসার জন্য লাইসেন্স প্রাপ্তির চেষ্টা করলেও তথ্যআপারা সে বিষয়েও তাদেরকে পরামর্শ প্রদান করেন।
v এবং vi) আইন ও জেন্ডার বিষয়ক যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
নারীদের প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য দূর করার জন্য বাংলাদেশের সংবিধানে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ বিভিন্ন আইন, নীতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও এ সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তার অভাবে অনেকক্ষেত্রে নারী এ সকল আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তথ্যআপারা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতায়ন এবং বিচার প্রার্থীতায় নারীর অভিগম্যতা (Access) নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করে থাকেন। প্রয়োজন অনুযায়ী তাদেরকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের সাথে যোগাযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ স্টেশনের সাথে যোগাযোগ এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার স্থানীয় কার্যালয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করেন। নারীদের অধিকার, পরিবারে তার ভূমিকা, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, ফতোয়া ও পারিবারিক সহিংসতায় করণীয় বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করার জন্য উঠান বৈঠক ও ডোর টু ডোর সেবার মাধ্যমে তথ্যআপারা পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। এ বিষয়ে সরকারের যে বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে সেগুলো অবহিত করার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত জরুরি সেবার নম্বরসমূহ তাদেরকে প্রদান করেন যেন যে কোন জরুরি মুহুর্তে তারার সেগুলো থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারেন।
অন্যান্য সেবাসমূহ:
উপরোক্ত ০৬ টি ক্ষেত্রে সেবাপ্রদান ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর অন্যান্য যে সকল সেবাসমূহ প্রদান করা হয় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ফ্রি ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ই-মেইল আদান প্রদান, বিদেশে অবস্থিত নিকটাত্নীয়ের সাথে স্কাউপিতে কথা বলা, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্যোগের আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণ ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকেন তথ্যআপারা।
উপরোল্লিখিত সেবাসমূহ মূলত ০৩ টি পদ্ধতিতে প্রদান করা হয়। যেমন,
১) উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত তথ্যকেন্দ্র হতে প্রত্যাশিদেরকে সেবাপ্রদান:
এক্ষেত্রে সেবাপ্রত্যাশিগণ তথ্যকেন্দ্রে এলে তাদেরকে প্রকল্পের আওতাভুক্ত সেবাসমূহ প্রদান করা হয়। সাধারণ তথ্যকেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকার মহিলাগণ তথ্যকেন্দ্র হতে সেবা গ্রহণ করে থাকেন। এছাড়া যে সমস্ত নারীরা বিভিন্ন সময় উপজেলায় অবস্থিত সরকারি অফিসসমূহে সেবা গ্রহণ করতে আসেন তারাও তথ্যকেন্দ্র হতে সেবা গ্রহণ করে থাকেন।
২) তৃণমূল পর্যায়ের নারীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ডোর টু ডোর প্রদ্ধতিতে সেবাপ্রদান:
এক্ষেত্রে তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও তথ্যসেবা সহকারীগণ গ্রামের মহিলাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদান করে থাকেন। তাদের সাথে ল্যাপটপ এবং মডেম থাকে। তারা গ্রামে ল্যাপটপ ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করে তাদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী তাদেরকে প্রকল্পের আওতাভুক্ত আওতাভুক্ত সেবাসমূহ প্রদান করেন। এ প্রক্রিয়ায় গ্রামীণ মহিলারা নিজ ঘরে বসেই তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানার সুযোগ পাচ্ছেন এবং এই সেবা তাদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করছে।
৩) উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মুক্ত আলোচনা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা:
উপরোক্ত ০২ টি পদ্ধতিতে সেবাপ্রদানের পাশাপাশি উঠান বৈঠক আয়োজন করে গ্রামীণ তৃণমূল মহিলাদের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হচ্ছে। প্রতিটি উঠান বৈঠকে সাধারণত ৫০ জন গ্রামীণ মহিলা অংশগ্রহণ করে থাকেন। মাসে প্রতিটি তথ্যকেন্দ্রে ২টি করে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উঠান বৈঠকে গ্রামীণ মহিলাদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন: স্বাস্থ্যগত সমস্যা, বাল্যবিবাহ, ফতোয়া, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, চাকরি সংক্রান্ত তথ্য, আইনগত সমস্যা এবং ডিজিটাল সেবাসমূহের নানাদিক (ই-মেইল, ভিডিও কনফারেন্স) সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
তথ্যকেন্দ্রে কর্মরত তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও তথ্যসেবা সহকারীগণ উঠান বৈঠকে উপস্থিত গ্রামীণ মহিলাদের ইন্টারনেট বাস্তব ব্যবহারের মাধ্যমে সেবাপ্রাপ্তির পদ্ধতি প্রদর্শন করেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সরকারি আইটি বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুক্ত আলোচনা করে থকেন। এছাড়া স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা, নারী আইনজ্ঞ, সমাজসেবী, সমাজের নেতৃত্বদানকারী মহিলারাও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা যেমন: বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক নিরোধ, পারিবারিক সহিংসতা এবং নারীনীতি সম্পর্কে মুক্ত আলোচনা করেন।
যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
লক্ষ্যভুক্ত মহিলাদের জন্য ৬টি বিষয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেবা প্রদান করা । যেমনঃ স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, ব্যবসা, আইনী সহায়তা এবং জেন্ডার।
i. স্বাস্থ্য সংক্রান্তঃ তথ্যকেন্দ্রসমূহ হতে বিনামূল্যে ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে ইন্টারনেটভিত্তিক নিম্নলিখিত প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবাসমূহ প্রদান করা হয় :
প্রত্যেক সেবাগ্রহীতার জন্য একটি হিসাব নম্বর তৈরি করে তাকে প্রদত্ত সেবার তথ্য সেভ করে রাখা হয় এবং তার সেবা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন মোবাইলে মেসেজ আকারে এবং ই-মেইলে তাকে প্রদান করা হয়। উপরন্তু সেভ করে রাখা এ তথ্য কোন সেবাগ্রহীতা পরবর্তীতে দেখতে চাইলে বা প্রিন্ট নিতে চাইলে সেটি প্রদান করা হয়।
উপরন্তু তথ্যআপা হেল্থ এ্যাপসের মাধ্যমে কোভিড ১৯ স্ক্রিনিং করা হয় এবং কোভিড ঝুকি বিষয়ে পূর্ভাবাস প্রদান করা হয়। এছাড়া, কোভিড ভেক্সিনেশনের নিবন্ধন করা হয়।
ii. শিক্ষা সংক্রান্তঃ ইন্টারনেট ব্যবহার করে শিক্ষা বিষয়ক যে সমস্ত সেবা প্রদান করা হয়
এছাড়া ক্যারিয়ার বিষয়ক পরামর্শসহ বিভিন্ন রকম সেবা প্রদান করা হয়।
iii. কৃষি বিষয়ক যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
তথ্যআপারা গ্রামীণ নারীদের প্রয়োজনীয় কৃষি সংক্রান্ত পরামর্শ প্রাপ্তিতে সহায়তা করেন। উঠান বৈঠকে কৃষি কর্মকর্তাদেরকে রিসোর্স পার্সন হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। সেখানে গ্রামীণ নারীদেরকে কৃষি বিষয়ক পরামর্শ প্রদান করা হয় এবং কোন নারী তার কৃষির সমস্যা সংক্রান্ত বিষয় কৃষি কর্মকর্তাকে অবহিত করে তার সমাধানে পরামর্শ পাচ্ছেন। তাছাড়া তথ্যআপারা ডোর টু ডোর সেবার আওতায় গ্রামীণ নারীদের কৃষি সংক্রান্ত সমস্যা জেনে তাদের সমস্যা আক্রান্ত কৃষির ছবি/ভিডিও ধারণ করে উপজেলা পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদেরকে তা প্রেরণ করে পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং নারীদেরকে প্রদান করেন। এছাড়া অনেকক্ষেত্রে তথ্যআপারা সংশ্লিষ্ট কৃষি ভূমিতে গিয়ে কর্মকর্তাদের সাথে গ্রামীণ নারীদের অনলাইনে সংযুক্ত করে তাৎক্ষণিক পরামর্শ গ্রহণের সুযোগ করে দেন।
iv. ব্যবসা সংক্রান্ত যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
তথ্যআপা প্রকল্প (২য় পর্যায়) যে ০৫ টি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ঘোষণা করেছে এর মধ্যে তৃতীয়টি হচ্ছে তথ্যকেন্দ্রের মাধ্যমে ই-কমার্স সহায়তা প্রদান। এ লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত, কমসুবিধাপ্রাপ্ত দরিদ্র ও অসহায় নারীদের মধ্য থেকে উদ্যোক্তা তৈরি এবং তাদের উৎপাদিত পণ্য ই-কমার্স পদ্ধতিতে বিক্রয়ের লক্ষ্যে প্রকল্পটির আওতায় লালসবুজ ডট কম (www.laalsobuj.com) নামের একটি ই-কমার্স মার্কেটপ্লেস চালু করা হয়েছে। সারাদেশব্যাপী তথ্যআপা প্রকল্পের নেটওয়ার্ককে কাজে লাগিয়ে ই-কমার্স কে প্রত্যন্ত অঞ্চলে তৃণমূল নারীদের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে সারাদেশের প্রতিষ্ঠিত তথ্যকেন্দ্রে কর্মরত তথ্যআপাদেরকে ই-কমার্স বিষয়ক প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে। এসব প্রশিক্ষিত তথ্যআপারা উপজেলায় উদ্যোক্তা নির্বাচন, তাদের মোটিভেশন প্রদান, মার্কেটপ্লেসে তাদের নিবন্ধনকরণ ও তাদের পণ্য ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে উপস্থাপন কাজে সহায়তা করছে। তথ্যআপারা ই-কমার্সে গ্রামীণ নারীদের সবরকম সহায়তা প্রদান করছেন। পাশাপাশি কোন নারী ব্যবসার জন্য লাইসেন্স প্রাপ্তির চেষ্টা করলেও তথ্যআপারা সে বিষয়েও তাদেরকে পরামর্শ প্রদান করেন।
v এবং vi) আইন ও জেন্ডার বিষয়ক যে সকল সেবা প্রদান করা হয়:
নারীদের প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্য দূর করার জন্য বাংলাদেশের সংবিধানে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনাসহ বিভিন্ন আইন, নীতি এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও এ সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং প্রয়োজনীয় সহায়তার অভাবে অনেকক্ষেত্রে নারী এ সকল আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তথ্যআপারা নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতায়ন এবং বিচার প্রার্থীতায় নারীর অভিগম্যতা (Access) নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করে থাকেন। প্রয়োজন অনুযায়ী তাদেরকে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের সাথে যোগাযোগ, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ স্টেশনের সাথে যোগাযোগ এবং জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার স্থানীয় কার্যালয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহায়তা প্রদান করেন। নারীদের অধিকার, পরিবারে তার ভূমিকা, বাল্যবিবাহ, যৌতুক, ফতোয়া ও পারিবারিক সহিংসতায় করণীয় বিষয়ে তাদেরকে সচেতন করার জন্য উঠান বৈঠক ও ডোর টু ডোর সেবার মাধ্যমে তথ্যআপারা পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। এ বিষয়ে সরকারের যে বিভিন্ন উদ্যোগ রয়েছে সেগুলো অবহিত করার পাশাপাশি এ সংক্রান্ত জরুরি সেবার নম্বরসমূহ তাদেরকে প্রদান করেন যেন যে কোন জরুরি মুহুর্তে তারার সেগুলো থেকে সেবা গ্রহণ করতে পারেন।
অন্যান্য সেবাসমূহ:
উপরোক্ত ০৬ টি ক্ষেত্রে সেবাপ্রদান ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর অন্যান্য যে সকল সেবাসমূহ প্রদান করা হয় তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ফ্রি ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ই-মেইল আদান প্রদান, বিদেশে অবস্থিত নিকটাত্নীয়ের সাথে স্কাউপিতে কথা বলা, সরকারের বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত উদ্যোগের আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণ ইত্যাদি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে থাকেন তথ্যআপারা।
উপরোল্লিখিত সেবাসমূহ মূলত ০৩ টি পদ্ধতিতে প্রদান করা হয়। যেমন,
১) উপজেলায় প্রতিষ্ঠিত তথ্যকেন্দ্র হতে প্রত্যাশিদেরকে সেবাপ্রদান:
এক্ষেত্রে সেবাপ্রত্যাশিগণ তথ্যকেন্দ্রে এলে তাদেরকে প্রকল্পের আওতাভুক্ত সেবাসমূহ প্রদান করা হয়। সাধারণ তথ্যকেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকার মহিলাগণ তথ্যকেন্দ্র হতে সেবা গ্রহণ করে থাকেন। এছাড়া যে সমস্ত নারীরা বিভিন্ন সময় উপজেলায় অবস্থিত সরকারি অফিসসমূহে সেবা গ্রহণ করতে আসেন তারাও তথ্যকেন্দ্র হতে সেবা গ্রহণ করে থাকেন।
২) তৃণমূল পর্যায়ের নারীদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ডোর টু ডোর প্রদ্ধতিতে সেবাপ্রদান:
এক্ষেত্রে তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও তথ্যসেবা সহকারীগণ গ্রামের মহিলাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক সেবা প্রদান করে থাকেন। তাদের সাথে ল্যাপটপ এবং মডেম থাকে। তারা গ্রামে ল্যাপটপ ব্যবহারের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে আলোচনা করে তাদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে আগ্রহ সৃষ্টি করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পাশাপাশি প্রয়োজন অনুযায়ী তাদেরকে প্রকল্পের আওতাভুক্ত আওতাভুক্ত সেবাসমূহ প্রদান করেন। এ প্রক্রিয়ায় গ্রামীণ মহিলারা নিজ ঘরে বসেই তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে জানার সুযোগ পাচ্ছেন এবং এই সেবা তাদের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করতে সাহায্য করছে।
৩) উঠান বৈঠকের মাধ্যমে মুক্ত আলোচনা ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা:
উপরোক্ত ০২ টি পদ্ধতিতে সেবাপ্রদানের পাশাপাশি উঠান বৈঠক আয়োজন করে গ্রামীণ তৃণমূল মহিলাদের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা হচ্ছে। প্রতিটি উঠান বৈঠকে সাধারণত ৫০ জন গ্রামীণ মহিলা অংশগ্রহণ করে থাকেন। মাসে প্রতিটি তথ্যকেন্দ্রে ২টি করে উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। উঠান বৈঠকে গ্রামীণ মহিলাদের জীবন ও জীবিকা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় যেমন: স্বাস্থ্যগত সমস্যা, বাল্যবিবাহ, ফতোয়া, নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা, চাকরি সংক্রান্ত তথ্য, আইনগত সমস্যা এবং ডিজিটাল সেবাসমূহের নানাদিক (ই-মেইল, ভিডিও কনফারেন্স) সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
তথ্যকেন্দ্রে কর্মরত তথ্যসেবা কর্মকর্তা ও তথ্যসেবা সহকারীগণ উঠান বৈঠকে উপস্থিত গ্রামীণ মহিলাদের ইন্টারনেট বাস্তব ব্যবহারের মাধ্যমে সেবাপ্রাপ্তির পদ্ধতি প্রদর্শন করেন। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, কৃষি কর্মকর্তা, শিক্ষা কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, সরকারি আইটি বিশেষজ্ঞসহ বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা তথ্যপ্রযুক্তি, শিক্ষা, চিকিৎসা, কৃষি ইত্যাদি বিষয়ে রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত থেকে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে মুক্ত আলোচনা করে থকেন। এছাড়া স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা, নারী আইনজ্ঞ, সমাজসেবী, সমাজের নেতৃত্বদানকারী মহিলারাও বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা যেমন: বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, যৌতুক নিরোধ, পারিবারিক সহিংসতা এবং নারীনীতি সম্পর্কে মুক্ত আলোচনা করেন।